
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে স্বেচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক ৪৮৩ পরিবারের ১২৮৭ জন রোহিঙ্গা বহনকারী ২৮টি বাস চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তত্ত্বাবধানে পুলিশী পাহারায় অতিরিক্ত আরো ১২টি গাড়ী তাদের বহরে ছিল।
রোববার দুই পর্বে উখিয়া কলেজের মাঠ থেকে ভাসানচরের জন্য রওনা হন এসব রোহিঙ্গা। তাদের সাথে অতিথি রোহিঙ্গা ছিল ৮১জন। এর আগে সকাল থেকেই বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তার মাধ্যমে উখিয়া কলেজ মাঠে নিয়ে আসা হয় তাদের। ১০ দফায় এবার প্রায় ১৩শ রোহিঙ্গা ভাসানচরে পাঠানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ সামছু-দৌজা জানান, এবার ১২৮৭ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে উদ্দেশে চট্রগ্রামে রওনা করেছে। সোমবার দুপুরে তাদের ওই দ্বীপে পৌঁছার কথা রয়েছে।
এদিকে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ৯ম দফায় ২০ হাজার রোহিঙ্গাকে সরকার ভাসানচরে পাঠায়। এছাড়া গত বছর মে মাসে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে সেখানে নিয়ে রাখা হয়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
এদিকে বিষয়ে ৮-এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসেন জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ১২৮৭জন রোহিঙ্গা এবারে ভাসানচরে যেতে রাজি হয়েছে। তারা ইতিমধ্যে বাসে যাত্রা করেছে।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের সেনাদের অভিযান থেকে প্রাণে বাঁচতে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করছে। রোহিঙ্গাদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত ১ লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।
পাঠকের মতামত